প্রতিদিন চরকা

প্রতিদিন চরকা

ময়মনসিংহ মৃতঞ্জয় স্কুল আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখছে








সাজ্জাদ হোসেন/ মাসুম

শিক্ষানগরী বলে খ্যাত ময়মনসিংহের প্রাচীন উচ্চ শিক্ষার প্রথম প্রতিষ্ঠান মৃত্যুঞ্জয় হাইস্কুল টি নানা প্রতিকলতা অতিক্রম করে  প্রতিযোগিতার বাজারে  ফিরতে চায় আবার নতুন রূপে, আগস্টের আগে মাদক ,ছিনতাই, চুরি খুন এসবই ছিল   স্কুুলের আশেপাশেই রাতে বসতো মাদকের হাট আগস্টের আগে এসবই ছিল সকলের জানা কিন্তু কোন এক অজনা ভয়ে অভয় দেখাতো না কেও শিক্ষকদের নীরব প্রতিবাদের কারণে স্কুল টি টিকে ছিল এত দিন এখন আবার তারা স্বপ্ন দেখেছে নতুন ভাবে
আগস্টের আগে স্কুল টি চালাতো এলাকার সন্ত্রাসীরা শিক্ষকদের চাপ সৃষ্টি করে ছাত্র মেসে ব্যাচলার তুলে দিত , মাদকের অভায়রন্য হিসেবে খ্যাতি পেলেও কেও খোজঁ রাখেন নি ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন মিছিল মিটিং নিয়ে যেত শিক্ষকরা বাধা দিলে ছাত্রছাত্রীদের পাশে থাকা বঙ্গবন্ধু পরিষদ ক্লাবে তালা ঝুলিয়ে আটকিয়ে রাখার প্রমান পাওয়া গেছে এক ছাত্রের মেরে চোখ অন্ধ করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে মধ্যরাতেও স্কুল শিক্ষকদের বাড়িতেও হামলা হয়েছে বহুবার  এসব বিষয়ে থানায় একাধিক জিডি করলে থানার এস আই কে এনে মধ্যরাতে খাশি জবাই করে খাওয়ানো হতো স্কুল প্রাঙ্গনে এসব অত্যাচারিত সহ্য করে কোন স্থানে সুরাহা না পেয়ে জেলা জর্জের কাছে বিচার দেওয়র পর একজন কে গ্রেফতার করা হয়েছিল মাত্র তিন ঘন্টা পর আবার থানা থেকে বেরিয়ে আসে এসব সন্ত্রাসীরা মোবাইল ছিনতাই ছিল নিয়মিত ঘটনা এসব বিষয় নিয়ে চরম অতংকে ভয় নিয়ে স্কুল পরিচালনা করছেন স্কুলের শিক্ষকরা আগস্ট এর পর অনেক টা নিরাপদ ভোগ করলেও এসব এলাকায় সিসি ক্যামারা বসানোর তাগিদ দিচ্ছেন স্কুল শিক্ষকরা ছাত্রীরা প্রতিনিয়ত হতো ইভটিজিং এর শিকার এতটাই অত্যাচারিত হওয়ার প্রতিফলন দেখা স্কুল গেট টি দিকে তাকালে, এসব ্সন্ত্রাসীদের দাবী না মানলে গেটে দা দিয়ে কুপানো হতো এলাকা এত বিপদজনক ছিল যে ১৫ মে ২০১৯ সালে ময়মনসিংহে যুবলীগ নেতা রেজাউল করিম ওরফে রাসেলকে (৩৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রাত সাড়ে তিনটার দিকে ময়মনসিংহ নগরের মৃত্যুঞ্জয় স্কুল এলাকা থেকে রেজাউলের লাশ উদ্ধার করা হয়। গত ২৫ ফেব্রæয়ারি ২০১৮ দিনগত মধ্যরাতে নগরীর মৃত্যুঞ্জয় স্কুল রোড এলাকায় রহস্যজনকভাবে গুলিবিদ্ধ হন ছাত্রলীগ নেতা শাওন। পরে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজধানীর ইবনেসিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ০৮ মার্চ দুপুরে মারা যান শাওন। রাতে  নির্বিগ্নে মাদকের বাজার বসতো মৃতঞ্জয় রাধা সুন্দুরী স্কলে
স্থানাীয় সন্ত্রাসীদের চাপে শিক্ষক এবং ছাত্ররা আতংকে থাকতো সবসময় যার প্রমান সিসি ক্যামারা গুলো কেও দিতে হযেছে নিরাপত্তা আগস্টের আগে স্কুল টি চালতো অনেকটা এলাকার সন্ত্রাসীদের কথায় না মানলে শিক্ষকদের বাড়ি ঘরে হামলা, এলাকার সন্ত্রাসীরা স্কুলের ছাত্রমেসে জোর করেই তোলে হতো ব্যাচেলারদের স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ অন্য শিক্ষকরাও একরকম সাহসের সঙ্গে লড়াই করে গেছেন এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে  তারপরও স্কুলটিতে বর্তমানে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। বিজ্ঞান মানবিকের পাশাপাশি চালু করা হয়েছে ভোকেশনাল কোর্স মাল্টিমিডিয়ার ক্লাসরুম। উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৫ ছাড়াও প্রাথমিকে শিক্ষক রয়েছেন জন। বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী এই স্কুলটি জাতীয় করণের দাবি অনেক আগে থেকেই। এছাড়া স্টাফ রয়েছে ২১ জন চারজন শিক্ষক শূনতা রয়েছে বায়েলজি, কারিগরি বাংলা সামাজিক বিজ্ঞান বিজ্ঞান পদে শিক্ষকের শূনতা রয়েছে আশা রয়েছে অচিরেই পূর্ণতা পাবে শিক্ষাঙ্গণ
শিক্ষানগরী বলে খ্যাত ময়মনসিংহের প্রাচীন উচ্চ শিক্ষার প্রথম প্রতিষ্ঠান মৃত্যুঞ্জয় হাইস্কুল। অবিভক্ত ভারতে ১৯০১ সালের ১৪ ফেব্রæয়ারি স্কুলটি প্রতিষ্ঠা হয়। বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী আইনজীবী প্রয়াত অনাথ বন্ধু গুহ তার বাবা মৃত্যুঞ্জয় গুহের নামে শহরের ব্রহ্মপুত্র পাড়ে আদালতপাড়ায় স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। অনাথ বন্ধু গুহের নামে শহরে এবি গুহ রোড স্কুলের নামে মৃত্যুঞ্জয় স্কুল রোড নামে সড়ক রয়েছে। ময়মনসিংহে এটিই ছিল প্রথম স্কুল। স্কুলের প্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন অমিয় ভূষণ গাঙ্গুলী। ঠিক কত শিক্ষার্থী নিয়ে স্কুলটি যাত্রা করেছিল তা জানা না গেলেও উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক-সাহিত্যিক রাজনীতিক আবুল মনসুর আহাম্মদ স্কুলের প্রথম মুসলিম ছাত্র ছিলেন এবং তাঁরই উদ্যোগে স্কুলে প্রথম মিলাদ চালু হয়েছিল বলে জানা গেছে। আবুল মনসুর আহাম্মদ ১৯১৭ সালে এই স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাস করেন। শুরু থেকেই স্কুলটির প্রথম শ্রেণী থেকে আজীবনের জন্য ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত স্বীকৃতি দেয়া হয়। দেশ বিভাগের আগ পর্যন্ত (১৯৪৭ সাল) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন নিয়ন্ত্রণে ছিল স্কুলের কার্যক্রম। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকও এই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত ইস্ট পাকিস্তান বোর্ডের অধীনে ছিল মুত্যৃঞ্জয় স্কুল। সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের মধ্যে আলোচিত নাম গোপীনাথ দত্ত (১৯৫০-১৯৭৪) স্কুলের প্রধান শিক্ষক রুকুন উদ্দিন জানান, হিন্দু অধ্যুষিত প্রাচীন ময়মনসিংহ শহর ব্রহ্মপুত্র ওপারের চরাঞ্চলের শিশু কিশোরদের শিক্ষা বিস্তারের কথা বিবেচনা করে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ওই সময়ে শহর শহরের বাইরে থেকে আসা অসংখ্য শিক্ষার্থীর পদচারণায় স্কুল চত্বর ছিল মুখরিত। শিল্পচার্য জয়নুল আবেদিন ১৯২৭-১৯২৯ সাল পর্যন্ত এই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। সংসদে বর্তমান বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদের বাবা খান বাহাদুর উমেদ আলী ১৯২১ সালে এই স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাস করেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ১৯৩৭-১৯৩৮ সাল পর্যন্ত এই স্কুলে পড়ালেখা করেছেন ৩য় ৪র্থ শ্রেণীতে। সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি শাহাব উদ্দিন আহম্মদ, দৈনিক সংবাদের সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক প্রয়াত বজলুর রহমান, দৈনিক ইত্তেফাকের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক রাহাত খান, সাবেক  ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, ভারতের সাবেক ডেপুটি হাই কমিশনার সঞ্জয় ভট্টাচার্যের বাবা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের প্রধান . অরবিন্দু গোস্বামীসহ অবিভক্ত ভারতের বহু খ্যাতিমান রাজনীতিক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, আইনজীবী, পদস্থ কর্মকর্তা এই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে এটি ইতিহাস শিক্ষার প্রতিযোগীতার বাজারে কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠান টি ছাত্রছাত্রী দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে পরিবশেগত কারন অনেকটাই দায়ী থেকে পরিত্রাণ চান স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ সকল শিক্ষক শিক্ষীকা  ছাত্রছাত্রীরা আবারো নতুন ভাবে নতুন রূপে শিক্ষার  বাজারে উচ্চ আসীন হবে প্রত্যাশা সকলের
 

 


Post a Comment

0 Comments